পহেলা বৈশাখ-১৪১৮
সম্রাট আকবর তার শাসনামলের শুরু থেকেই সহজ বিজ্ঞানভিত্তিক ও কার্যকর পদ্ধতিতে বছরের হিসাব রাখার কথা ভাবছিলেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনার দায়িত্ব দেন সে সময়ের বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও জ্যোর্তিবিদ আমির ফতুল্লাহ শিরাজীকে। তার প্রচেষ্টায় ১৫৮৪ খ্রীষ্টব্দের ১০ বা ১১ মার্চ সম্রাট আকবর ‘ইলাহী সন’ নামে নতুন এক সন প্রথার প্রচলন করেন। সে সময়ের কৃষকশ্রেণীর কাছে এটি ‘ফসলি সন’ নামে পরিচিত হয় কিন' পরে এটি ‘বঙ্গাব্দ’ নামেই প্রচলিত হয়। নতুন এই সালটি আকবরের রাজত্বের ২৯তম বর্ষে প্রবর্তিত হলেও তা গণনা আরম্ভ হয় ১৫৫৬ খ্রীস্টাব্দের ৫ নভেম্বর থেকে। কেন? কারণ ওই দিনেই দ্বিতীয় পানিপথের যুদ্ধে তিনি হিমুকে পরাজিত করেছিলেন।
নতুন বর্ষের অনুষ্ঠান হালখাতা
পহেলা বৈশাখ মানে কি পান্তা ইলিশ
পার্বত্য জেলায়, আদিবাসীদের বর্ষবরণ
অন্যান্য দেশে বাংলা নববর্ষ আয়োজন
ভারতের কোলকাতা সহ বেশি কটি অঙ্গরাজ্যে পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হয়। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাঙালী সম্প্রদায় বাংলা নববর্ষে স্ট্রিট ফেস্টিভাল এর আয়োজন করে। ইউরোপে এটিই এশিয়ানদের সবচেয়ে বড় উৎসব। বাংলাদেশ ও ভারতের বাইরে এটিই বাঙালিদের সবচেয়ে বড় উৎসবও। এখানে প্রবাসী বাঙালিরা বিভিন্ন স্থানে ছোট আকারের হলেও মেলার আয়োজন করে। সেখানে পান্তা ইলিশেরও ব্যবস্থা থাকে।
তবে শুধু ইউরোপেই নয় আজকাল আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াত মোটকথা যেখানেই বাঙালি সম্প্রদায় আছে সেখানেই মহাসমারোহে উদযাপিত হয় পয়লা বৈশাখ। দেশ থেকে সেসব মেলার আয়োজকরা কিনে নিয়ে যান রকমারি পোশাক-আশাক আর ঐতিহ্যবাহি খাবার। বিদেশের মাটিতে দেশি উৎসবে সেখানেও জমে ওঠে বাঙালির এক অনবিল মিলন মেলা।
কলকাতা
পয়লা বৈশাখ বা পহেলা বৈশাখ (বাংলা পঞ্জিকার প্রথম মাস বৈশাখের ১ তারিখ) বাংলা সনের প্রথম দিন, তথা বাংলা নববর্ষ। দিনটি বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গেনববর্ষ হিসেবে বিশেষ উৎসবের সাথে পালিত হয়। ত্রিপুরায় বসবাসরত বাঙালিরাও এই উৎসবে অংশ নেয়। সে হিসেবে এটি বাঙালিদের একটি সর্বজনীন উৎসব। বিশ্বের সকল প্রান্তের সকল বাঙালি এ দিনে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়, ভুলে যাবার চেষ্টা করে অতীত বছরের সকল দুঃখ-গ্লানি। সবার কামনা থাকে যেন নতুন বছরটি সমৃদ্ধ ও সুখময় হয়। বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা একে নতুনভাবে ব্যবসা শুরু করার উপলক্ষ্য হিসেবে বরণ করে নেয়। গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে ১৪ই এপ্রিল অথবা ১৫ই এপ্রিল পহেলা বৈশাখ পালিত হয়। আধুনিক বা প্রাচীন যে কোন পঞ্জিকাতেই এই বিষয়ে মিল রয়েছে। বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৪ই এপ্রিল এই উৎসব পালিত হয়। বাংলা একাডেমী কর্তৃক নির্ধারিত আধুনিক পঞ্জিকা অনুসারে এই দিন নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এদিন বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে।
বাংলা দিনপঞ্জীর সঙ্গে হিজরী ও খ্রিস্টীয় সনের মৌলিক পার্থক্য হলো হিজরী সন চাঁদের হিসাবে এবং খ্রিস্টীয় সন ঘড়ির হিসাবে চলে। এ কারণে হিজরী সনে নতুন তারিখ শুরু হয় সন্ধ্যায় নতুন চাঁদের আগমনে। ইংরেজি দিন শুর হয় মধ্যরাতে। আর বাংলা সনের দিন শুরু হয় ভোরে, সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে। কাজেই সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে শুর হয় বাঙালির পহেলা বৈশাখের উৎসব।
ইতিহাস
হিন্দু সৌর পঞ্জিকা অনুসারে বাংলা বারটি মাস অনেক আগে থেকেই পালিত হত। এই সৌর পঞ্জিকার শুরু হত গ্রেগরীয় পঞ্জিকায় এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় হতে। হিন্দু সৌর বছরের প্রথম দিন আসাম, বঙ্গ, কেরল, মনিপুর,নেপাল, উড়িষ্যা, পাঞ্জাব, তামিল নাড়ু এবং ত্রিপুরার সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে অনেক আগে থেকেই পালিত হত।এখন যেমন নববর্ষ নতুন বছরের সূচনার নিমিত্তে পালিত একটি সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে, এক সময় এমনটি ছিল না। তখন নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ আর্তব উৎসব তথা ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে পালিত হত। তখন এর মূল তাৎপর্য ছিল কৃষিকাজ। প্রাযুক্তিক প্রয়োগের যুগ শুরু না হওয়ায় কৃষকদের ঋতুর উপরই নির্ভর করতে হত।
ভারতবর্ষে মুঘল সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর সম্রাটরা হিজরী পঞ্জিকা অনুসারে কৃষি পণ্যের খাজনা আদায় করত। কিন্তু হিজরি সন চাঁদের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় তা কৃষি ফলনের সাথে মিলত না। এতে অসময়ে কৃষকদেরকে খজনা পরিশোধ করতে বাধ্য করতেহত। খাজনা আদায়ে সুষ্ঠুতা প্রণয়নের লক্ষ্যে মুঘল সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। তিনি মূলত প্রাচীন বর্ষপঞ্জতে সংস্কার আনার আদেশ দেন। সম্রাটের আদেশ মতে তৎকালীন বাংলার বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ ফতেহউল্লাহ সিরাজি সৌর সন এবং আরবি হিজরী সনের উপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম বিনির্মাণ করেন। ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০ই মার্চ বা ১১ই মার্চ থেকে বাংলা সন গণনা শুরু হয়। তবে এই গণনা পদ্ধতি কার্যকর করা হয় আকবরের সিংহাসন আরোহণের সময় (৫ই নভেম্বর, ১৫৫৬) থেকে। প্রথমে এই সনের নাম ছিল ফসলি সন, পরে বঙ্গাব্দ বা বাংলা বর্ষ নামে পরিচিত হয়।
মুগল আমলে রাজারা খাজনা আদায় করতেন চান্দ্রবর্ষ অনুযায়ী। চাঁদের উদয় অস্তের হিসেব করে গোনা হয় চান্দ্রবর্ষ। যেমন, আরবি হিজরী সন হলো চান্দ্রবর্ষ। আর সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর পরিক্রমণের উপর ভিত্তি করে হিসাব করা হয় সৌরবর্ষ, যেমন, খ্রীষ্টবর্ষ বা ইংরেজি সন। তখনকার দিনে কৃষকদের খাজনা চান্দ্রবর্ষ অনুযায়ী দিতে হতো। কিন্তু কৃষক তার জমির ফসল ঘরে তুলতে পারতো একটি নিদিষ্ট সময় পর পর। কিন্তু চান্দ্রবর্ষ প্রতিবছর ১১ দিন করে এগিয়ে যেতো যা কৃষকের খাজনা দেয়া ও ফসল তোলার মধ্যে একটা সমস্যা সৃষ্টি করতো। কৃষকশ্রেণীর জন্য খাজনা দেয়া অনেক সময়ই কষ্টদায়ক ব্যাপার হয়ে দাঁড়াতো।তবে ইদানীং অনেক ইতিহাসবিদ বলছেন, সম্রাট আকবর বাংলা সন চালু করেননি। কারণ আকবরের ‘আইন-ই-আকবর’-এ ইলাহী সন নিয়ে অনেক কথা থাকলেও সেখানে বাংলা সন নিয়ে কোন কথা নেই।
আকবরের সময়কাল থেকেই পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন শুরু হয়। তখন প্রত্যেককে চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সকল খাজনা, মাশুল ও শুল্ক পরিশোধ করতে হত। এর পর দিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখে ভূমির মালিকরা নিজ নিজ অঞ্চলের অধিবাসীদেরকে মিষ্টান্ন দ্বারা আপ্যায়ন করতেন। এ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করা হত। এই উৎসবটি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয় যার রুপ পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে এই পর্যায়ে এসেছে। তখনকার সময় এই দিনের প্রধান ঘটনা ছিল একটি হালখাতা তৈরি করা। হালখাতা বলতে একটি নতুন হিসাব বই বোঝানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে হালখাতা হল বাংলা সনের প্রথম দিনে দোকানপাঠের হিসাব আনুষ্ঠানিকভাবে হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া। গ্রাম, শহর বা বাণিজ্যিক এলাকা, সকল স্থানেই পুরনো বছরের হিসাব বই বন্ধ করে নতুন হিসাব বই খোলা হয়। হালখাতার দিনে দোকনদাররা তাদের ক্রেতাদের মিষ্টান্ন আপ্যায়ন করে থাকে। এই প্রথাটি এখনও অনেকাংশে প্রচলিত আছে, বিশেষত স্বর্ণের দোকানে।
আকবরের সময়কাল থেকেই পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন শুরু হয়। তখন প্রত্যেককে চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সকল খাজনা, মাশুল ও শুল্ক পরিশোধ করতে হত। এর পর দিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখে ভূমির মালিকরা নিজ নিজ অঞ্চলের অধিবাসীদেরকে মিষ্টান্ন দ্বারা আপ্যায়ন করতেন। এ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করা হত। এই উৎসবটি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয় যার রুপ পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে এই পর্যায়ে এসেছে। তখনকার সময় এই দিনের প্রধান ঘটনা ছিল একটি হালখাতা তৈরি করা। হালখাতা বলতে একটি নতুন হিসাব বই বোঝানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে হালখাতা হল বাংলা সনের প্রথম দিনে দোকানপাঠের হিসাব আনুষ্ঠানিকভাবে হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া। গ্রাম, শহর বা বাণিজ্যিক এলাকা, সকল স্থানেই পুরনো বছরের হিসাব বই বন্ধ করে নতুন হিসাব বই খোলা হয়। হালখাতার দিনে দোকনদাররা তাদের ক্রেতাদের মিষ্টান্ন আপ্যায়ন করে থাকে। এই প্রথাটি এখনও অনেকাংশে প্রচলিত আছে, বিশেষত স্বর্ণের দোকানে।
আধুনিক নববর্ষ উদযাপনের খবর প্রথম পাওয়া যায় ১৯১৭ সালে। প্রথম মহাযুদ্ধে ব্রিটিশদের বিজয় কামনা করে সে বছর পহেলা বৈশাখে হোম কীর্ত্তণ ও পূজার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর ১৯৩৮ সালেও অনুরূপ কর্মকান্ডের উল্লেখ পাওযা যায়।[১] পরবর্তী সময়ে ১৯৬৭ সনের আগে ঘটা করে পহেলা বৈশাখ পালনের রীতি তেমন একটা জনপ্রিয় হয় নি।
অনুমান করা হয়, শক রাজবংশকে স্মরণীয় করে রাখতেই ৭৮ খ্রীষ্টাব্দে প্রবর্তিত শকাব্দ (শক বর্ষপঞ্জির) থেকে বাংলা সনের নামগুলি এসেছে। বিভিন্ন তারকারাজির নামে বাংলা মাসগুলির নামকরণ করা হয় সেগুলো হলো: বিশাখা থেকে বৈশাখ, জ্যেষ্ঠা থেকে জৈষ্ঠ্য, আষাঢ়া থেকে আষাঢ়, শ্রবণা থেকে শ্রাবণ, ভাদ্রপদ থেকে ভাদ্র, কৃত্তিকা থেকে কার্তিক, অগ্রাইহনী থেকে অগ্রহায়ণ, পুষ্যা থেকে পৌষ, মঘা থেকে মাঘ, ফল্গুনি থেকে ফাল্পুন, এবং চিত্রা থেকে চৈত্র। অগ্রহায়ন মাসের নামের আরেকটি ব্যাখ্যা হলো: অগ্র অর্থ প্রথম, হায়ন অর্থ বর্ষ বা ধান। আগে এই মাস থেকেই বছর গণনা আরম্ভ হতো কিম্বা এই সময়ে প্রধান ফসল ধান কাটা হতো। তাই এই মাসের নাম হয় অগ্রহায়ণ।
এখন তো মাত্র সাতটি দিনের নাম দিয়ে পুরো বছরের হিসাব রাখি আমরা। আকবরের সময় কিন্তু মাসের প্রত্যেকটি দিনের জন্য পৃথক নাম ছিল। বুঝতেই পারছো, তখনকার লোকদের কতই না কষ্ট হতো প্রতিদিনের নাম মনে রাখতে। মানুষের এতো কষ্ট দেখেই বুঝি সম্রাট শাহজাহানের মনে কিছুটা দয়ার উদ্রেক হয়। ধারণা কার হয়, তিনি একজন বিদেশী পন্ডিতের সাহায্য নিয়ে সাপ্তাহিক পদ্ধতিতে দিনের নামকরণ পদ্ধতি চালু করেন। খেয়াল করেছ নিশ্চয়ই ইংরেজি দিনের নামের সাথে বাংলা নামের মিল রাখা হয়েছে। যেমন সানডে (Sunday) হলো রবিবার। ইংরেজি Sun (সান) অর্থ সুর্য বা রবি।
বাংলা বর্ষপঞ্জি বা বঙ্গাব্দ বাঙালির নিজস্ব সন হলেও সারা বিশ্বের সাথে নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ রাখতে বাংলাদেশের সব জায়গাতেই খ্রিষ্টীয় সন ব্যবহার করা হয়। আর তোমরা তো জানোই, খ্রিষ্টীয় সনে প্রতি চার বছর পর ফেব্রুয়ারি মাসে অতিরিক্ত ১ দিন যোগ করা হয়। একে লিপ ইয়ার বা অধিবর্ষ বলে।
খ্রিষ্টীয় সনের সঙ্গে বঙ্গাব্দের দিন তারিখের গরমিলের কারণে সাধারণ মানুষের পক্ষে উভয় সন গণনায় সমস্যা হতো। এ সমস্যা দুর করতে ১৯৬৬ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমীর তত্ত্ববধানে মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র নেতৃত্বে একটি বঙ্গাব্দ সংষ্কার কমিটি গঠিত হয়। ওই কমিটি চার বছর পর পর চৈত্র মাস ৩০ দিনের পরিবর্তে ৩১ দিনে গণনা করার পরামর্শ দেয়। আর এভাবেই আধুনিক বঙ্গাব্দ বিশ্বের বিজ্ঞানসম্মত সনগুলির সমমর্যাদা পেলো।
এখন তো মাত্র সাতটি দিনের নাম দিয়ে পুরো বছরের হিসাব রাখি আমরা। আকবরের সময় কিন্তু মাসের প্রত্যেকটি দিনের জন্য পৃথক নাম ছিল। বুঝতেই পারছো, তখনকার লোকদের কতই না কষ্ট হতো প্রতিদিনের নাম মনে রাখতে। মানুষের এতো কষ্ট দেখেই বুঝি সম্রাট শাহজাহানের মনে কিছুটা দয়ার উদ্রেক হয়। ধারণা কার হয়, তিনি একজন বিদেশী পন্ডিতের সাহায্য নিয়ে সাপ্তাহিক পদ্ধতিতে দিনের নামকরণ পদ্ধতি চালু করেন। খেয়াল করেছ নিশ্চয়ই ইংরেজি দিনের নামের সাথে বাংলা নামের মিল রাখা হয়েছে। যেমন সানডে (Sunday) হলো রবিবার। ইংরেজি Sun (সান) অর্থ সুর্য বা রবি।
বাংলা বর্ষপঞ্জি বা বঙ্গাব্দ বাঙালির নিজস্ব সন হলেও সারা বিশ্বের সাথে নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ রাখতে বাংলাদেশের সব জায়গাতেই খ্রিষ্টীয় সন ব্যবহার করা হয়। আর তোমরা তো জানোই, খ্রিষ্টীয় সনে প্রতি চার বছর পর ফেব্রুয়ারি মাসে অতিরিক্ত ১ দিন যোগ করা হয়। একে লিপ ইয়ার বা অধিবর্ষ বলে।
খ্রিষ্টীয় সনের সঙ্গে বঙ্গাব্দের দিন তারিখের গরমিলের কারণে সাধারণ মানুষের পক্ষে উভয় সন গণনায় সমস্যা হতো। এ সমস্যা দুর করতে ১৯৬৬ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমীর তত্ত্ববধানে মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র নেতৃত্বে একটি বঙ্গাব্দ সংষ্কার কমিটি গঠিত হয়। ওই কমিটি চার বছর পর পর চৈত্র মাস ৩০ দিনের পরিবর্তে ৩১ দিনে গণনা করার পরামর্শ দেয়। আর এভাবেই আধুনিক বঙ্গাব্দ বিশ্বের বিজ্ঞানসম্মত সনগুলির সমমর্যাদা পেলো।
নতুন বছরের উৎসবের সঙ্গে গ্রামীণ জনগোষ্টীর কৃষ্টি ও সংস্কৃতির নিবিড় যোগাযোগ। গ্রামে মানুষ ভোরে ঘুম থেকে ওঠে, নতুন জামাকাপড় পড়ে এবং আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের বাড়িতে বেড়াতে যায়। বাড়িঘর পরিষ্কার করা হয় এবং মোটমুটি সুন্দর করে সাজানো হয়। বিশেষ খাবারের ব্যবস্থাও থাকে। কয়েকটি গ্রামের মিলিত এলাকায়, কোন খোলা মাঠে আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলার। মেলাতে থাকে নানা রকম কুঠির শিল্পজাত সামগ্রীর বিপণন, থাকে নানারকম পিঠা পুলির আয়োজন। অনেক স্থানে ইলিশ মাছ দিয়ে পান্তা ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা থাকে। এই দিনের একটি পুরনো সংস্কৃতি হলো গ্রামীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন। এর মধ্যে থাকে নৌকাবাইচ, লাঠি খেলা কিংবা কুস্তির। বাংলাদেশে এরকম কুস্তির সবচেয়ে বড় আসরটি হয় ১২ বৈশাখ, চট্টগ্রাম-এর লালদিঘী ময়দান-এ। এটি জব্বারের বলি খেলা নামে পরিচিত।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরে পহেলা বৈশাখের মূল অনুষ্ঠানের কেন্দ্রবিন্দু সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট-এর গানের মাধ্যমে নতুন বছরের সূর্যকে আহবান। পহেলা বৈশাখ সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ছায়ানটের শিল্পীরা সম্মিলত কন্ঠে গান গেয়ে নতুন বছরকে আহবান জানান। স্থানটির পরিচিতি বটমূল হলেও প্রকৃত পক্ষে যে গাছের ছায়ায় মঞ্চ তৈরি হয় সেটি বট গাছ নয়, অশ্বত্থ গাছ [২]। ১৯৬০-এর দশকে পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠির নিপীড়ন ও সাংস্কৃতিক সন্ত্রাসের প্রতিবাদে ১৯৬৭ সাল থেকে ছায়ানটের এই বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সূচনা। [২]।
ঢাকার বৈশাখী উৎসবের একটি আবশ্যিক অঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে পহেলা বৈশাখে সকালে এই শোভাযাত্রাটি বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় চারুকলা ইনস্টিটিউটে এসে শেষ হয়। এই শোভাযাত্রায় গ্রামীণ জীবণ এবং আবহমান বাংলাকে ফুটিয়ে তোলা হয়। শোভাযাত্রায় সকল শ্রেণী-পেশার বিভিন্ন বয়সের মানুষ অংশগ্রহণ করে। শোভাযাত্রার জন্য বানানো নয় রং-বেরঙের মুখোশ ও বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিলিপি। ১৯৮৯ সাল থেকে [২] এই মঙ্গল শোভাযাত্রা পহেলা বৈশাখের উৎসবের একটি অন্যতম আকর্ষণ।
পৃথিবীর সকল জাতিই নিজ নিজ বছরের পয়লা দিনকে বরণ করে নেয়। আনন্দ উৎসবে দিনটিকে করে তোলে স্মরণীয়। প্রাচীনকাল থেকেই এরকমের বর্ষবরণ প্রথা চলে আসছে। সকল জাতির সংষ্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে এই নববর্ষ বা বছরের প্রথম দিনটিকে বরণ করে নেয়ার ইতিহাস জড়িয়ে আছে। প্রাচীন আরবীয়রা ‘ওকাজের মেলা’, ইরানীরা ‘নওরোজ উৎসব’ ও প্রাচীন ভারতীয়রা ‘দোল পূর্ণিমার দিন’ নববর্ষ উদযাপন করতো।
প্রতি বছর এপ্রিল মাস এলেই চারিদিকে শুরু হয়ে যায় বৈশাখী উৎসবের নানা আয়োজন। বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে যে সাংষ্কৃতিক সংগঠনটি নাম তার ছায়ানট।
স্বাধীনতা-পূর্ব বাংলাদেশের কথা। সে সময়ের পাকিস্তানী শাসকরা বাঙালি সংষ্কৃতিকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছিল। রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গান প্রকাশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার প্রতিবাদে ১৩৭৫ বঙ্গাব্দে (১৯৬৫ সালে) ছায়ানট রমনা পার্কে পহেলা বৈশাখ উদাযাপনের আয়োজন করে। রবি ঠাকুরের ’এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ গানের মধ্যে দিয়ে স্বাগত জানায় বৈশাখকে। সেই ধারা আজও অব্যাহত আছে। ১৯৭২ সালের পর থেকে মূলত এটি জাতীয় উৎসব হিসেবে স্বীকৃত হয়। ১৯৮০ সালে এই উৎসবকে আরো এক ধাপ বাড়তি রংয়ের ছোঁয়া দিতে প্রচলন হয়েছে বৈশাখী শোভাযাত্রার।
এছাড়া এদিনে বাংলা একাডেমী, নজরুল ইন্সটিটিউট, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী, বাংলাদেশ শিশু একাডেমী, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, বুলবুল ললিতকলা একাডেমী, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন, নজরুল একাডেমী, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন প্রভৃতি। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মসূচীতে থাকে সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা, বর্ণাঢ্য মিছিল, বৈশাখী মেলা ইত্যাদি। দৈনিক পত্রিকাগুলো এ উপলক্ষে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করে। রেডিও ও টেলিভিশনে প্রচারিত হয় বিনোদনমূলক নানারকমের অনুষ্ঠান।
প্রতি বছর এপ্রিল মাস এলেই চারিদিকে শুরু হয়ে যায় বৈশাখী উৎসবের নানা আয়োজন। বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে যে সাংষ্কৃতিক সংগঠনটি নাম তার ছায়ানট।
স্বাধীনতা-পূর্ব বাংলাদেশের কথা। সে সময়ের পাকিস্তানী শাসকরা বাঙালি সংষ্কৃতিকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছিল। রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গান প্রকাশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার প্রতিবাদে ১৩৭৫ বঙ্গাব্দে (১৯৬৫ সালে) ছায়ানট রমনা পার্কে পহেলা বৈশাখ উদাযাপনের আয়োজন করে। রবি ঠাকুরের ’এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ গানের মধ্যে দিয়ে স্বাগত জানায় বৈশাখকে। সেই ধারা আজও অব্যাহত আছে। ১৯৭২ সালের পর থেকে মূলত এটি জাতীয় উৎসব হিসেবে স্বীকৃত হয়। ১৯৮০ সালে এই উৎসবকে আরো এক ধাপ বাড়তি রংয়ের ছোঁয়া দিতে প্রচলন হয়েছে বৈশাখী শোভাযাত্রার।
এছাড়া এদিনে বাংলা একাডেমী, নজরুল ইন্সটিটিউট, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী, বাংলাদেশ শিশু একাডেমী, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, বুলবুল ললিতকলা একাডেমী, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন, নজরুল একাডেমী, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন প্রভৃতি। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মসূচীতে থাকে সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা, বর্ণাঢ্য মিছিল, বৈশাখী মেলা ইত্যাদি। দৈনিক পত্রিকাগুলো এ উপলক্ষে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করে। রেডিও ও টেলিভিশনে প্রচারিত হয় বিনোদনমূলক নানারকমের অনুষ্ঠান।
নতুন বর্ষের অনুষ্ঠান হালখাতা
বাংলা নববর্ষকে উৎসব হিসেবে পালন শুরু হয় আকবরের সময় থেকেই। ওই সময় নববর্ষ পালিত হতো ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে। এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল কৃষি কাজের, আর কৃষিকাজ হলো ঋতুনির্ভর। সে সময় বাংলার কৃষকরা চৈত্রমাসের শেষ দিন অবধি জমিদার, তালুকদার ও অন্যান্য ভূ-স্বামীদের খাজনা শোধ করতো। পরদিন নববর্ষে ভূ-স্বামীরা তাদের মিষ্টিমুখ করাতেন। এ উপলক্ষে তখন মেলা ও অন্যান্য আয়োজন করা হতো। জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত না হওয়া পর্যন্ত পহেলা বৈশাখ পালন হতো খাজনা আদায়ের উৎসব হিসেবে। পরে পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিশে পহেলা বৈশাখ হয়ে ওঠে আনন্দময় এক উৎসব। নববর্ষ পালিত হতে থাকে শুভদিন হিসেবে।
জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর নববর্ষের মূল উৎসব ছিল হালখাতা। এটা ছিল পুরোপুরিই ব্যবসায়িক ব্যাপার। ব্যবসায়িরা তাদের পুরনো হিসাবপাতি সম্পন্ন করে নতুন হিসাবের খাতা খুলতেন, এটাই ছিল হালখাতা। হালখাতা উপলক্ষে তারা নতুন-পুরাতন খদ্দেরদের আমন্ত্রণ জানিয়ে মিষ্টিমুখ করাতেন ও নতুন করে তাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপন করতেন। চিরাচরিত এই উৎসব আজও ভারতের কলকাতা ও আমাদের গ্রামবাঙলায় প্রচলিত আছে।
কালে কালে এ নববর্ষের সঙ্গে জড়িত হয়েছে আরও অনেক আনুষাঙ্গিক বিষয়। সেসবের বেশিরভাগই হারিয়ে গেলেও কোন কোনটি অঞ্চল বিশেষে টিকে আছে। হারিয়ে যাওয়া এমন একটি অনুষ্ঠান হলো পূণ্যাহ। পুণ্যাহ ছিলো বাংলার খাজনা আদায়ের বার্ষিক বন্দোবস্তের একটি উৎসব। এর উদ্ভব কাল সঠিকভাবে জানা যায়না। তবে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বিলুপ্ত হওয়ার আগ অবধি এ অনুষ্ঠান চালু ছিলো। এদিন প্রজারা ভাল পোশাক পরে জমিদারের কাচারিতে যেতেন খাজনা-নজরানা দিতে, যেনো পূণ্য কাজ করতে যাচ্ছেন এমন একটা ভাব। তাই এর নাম হয়েছে পূণ্যাহ।
জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর নববর্ষের মূল উৎসব ছিল হালখাতা। এটা ছিল পুরোপুরিই ব্যবসায়িক ব্যাপার। ব্যবসায়িরা তাদের পুরনো হিসাবপাতি সম্পন্ন করে নতুন হিসাবের খাতা খুলতেন, এটাই ছিল হালখাতা। হালখাতা উপলক্ষে তারা নতুন-পুরাতন খদ্দেরদের আমন্ত্রণ জানিয়ে মিষ্টিমুখ করাতেন ও নতুন করে তাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপন করতেন। চিরাচরিত এই উৎসব আজও ভারতের কলকাতা ও আমাদের গ্রামবাঙলায় প্রচলিত আছে।
কালে কালে এ নববর্ষের সঙ্গে জড়িত হয়েছে আরও অনেক আনুষাঙ্গিক বিষয়। সেসবের বেশিরভাগই হারিয়ে গেলেও কোন কোনটি অঞ্চল বিশেষে টিকে আছে। হারিয়ে যাওয়া এমন একটি অনুষ্ঠান হলো পূণ্যাহ। পুণ্যাহ ছিলো বাংলার খাজনা আদায়ের বার্ষিক বন্দোবস্তের একটি উৎসব। এর উদ্ভব কাল সঠিকভাবে জানা যায়না। তবে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বিলুপ্ত হওয়ার আগ অবধি এ অনুষ্ঠান চালু ছিলো। এদিন প্রজারা ভাল পোশাক পরে জমিদারের কাচারিতে যেতেন খাজনা-নজরানা দিতে, যেনো পূণ্য কাজ করতে যাচ্ছেন এমন একটা ভাব। তাই এর নাম হয়েছে পূণ্যাহ।
পহেলা বৈশাখের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান বৈশাখী মেলা। কোন কোন জায়গায় এই মেলা চলে সপ্তাহ জুড়ে। এক হিসেবে দেখা গেছে, সারা বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখ ও বৈশাখের প্রথম সপ্তাহে প্রায় ২০০টি মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
সবচেয়ে রঙচঙে ও আনন্দঘন নববর্ষ উদযাপিত হয় ঢাকায়। হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয় রমনার বটমূলে। ছায়ানটের শিল্পীরা বৈশাখের আগমনী গান গেয়ে স্বাগত জানায় নববর্ষকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের বকুলতলায় একই ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ইনস্টিটিউটের সকল শিক্ষক-ছাত্ররা মিলে আনন্দ মিছিল বের করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। চারুশিল্পীদের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা নববর্ষের আহ্বানকে করে তোলে নয়ন-মনোহর ও গভীর আবেদনময়। এদিন শহীদ মিনার, টি.এস.সি এবং চারুকলা সহ পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা পরিণত হয় এক বিশাল জনসমুদ্রে।
এসব মেলায় পাওয়া যায় স্থানীয় কৃষিজাত দ্রব্য, কারূপণ্য, লোকশিল্পজাত পণ্য, কুটির শিল্পজাত সামগ্রী, সব ধরণের হস্তশিল্প ও মৃৎশিল্পজাত সামগ্রী। এছাড়া শিশু-কিশোরদের খেলনা, মেয়েদের সাজসজ্জার সামগ্রী ইত্যাদি। এছাড়াও রকমারি লোকজ খাদ্যসামগ্রী যেমন, চিড়া, মুড়ি, খৈ, বাতাসা ও বিভিন্ন প্রকার মিষ্টির বৈচিত্রময় সমারোহ থাকে মেলায়। আর পান্তা ইলিশ বৈশাখী মেলার প্রধান আকর্ষণে পরিনত হয়েছে বাংলাদেশের সব জেলায়।
সম্প্রতি বৈশাখী উৎসবের আরেকটি আকর্ষণ হচ্ছে বই। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা ইত্যাদি শহরে নববর্ষ উপলক্ষে বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলা একাডেমীর বইয়ের আড়ং এসব বইমেলার মধ্যে সবচেয়ে বড়।
শুধু খাওয়া দাওয়াই নয়, এসব মেলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকগীতি ও লোকনৃত্য পরিবেশন করা হয়। সেখানে পালাগান, কবিগান, জারিগান, গম্ভিরা গান গাজীর গান, আলকাপ গান সহ যাত্রাপালার আয়োজন থাকে। কোথাও কোথাও পথনাট্য উৎসব হয়ে থাকে। চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, নাটক, পুতুল নাচ, নাগর দোলা, সার্কাস ইত্যাদি হয় বৈশাখী মেলার বিশেষ আকর্ষণ। শিশু-কিশোরদের জন্য আরো থাকে বায়োস্কোপ। শহরাঞ্চলে নগর সংষ্কৃতির আমেজেও এখন আয়োজিত হয় বৈশাখী মেলা, এই মেলা বাঙালিদের কাছে এক অনাবিল মিলন মেলায় পরিণত হয়। এই মেলা আনন্দঘন লোকায়ত সংষ্কৃতির ধারক।
বাংলাদেশে যেসব জায়গায় বৈশাখী মেলা বসে সেসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: নারায়নগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, সাভার, রংপুরের পায়রাবন্দ, দিনাজপুরের ফুলছড়ির ঘাট, পাবনা, মহাস্থানগড়, কুমিল্লার লাঙ্গলকোট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মহেশপুর, খুলনার সাতগাছি, ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল অঞ্চল, সিলেটের জাফলং, মণিপুর, বরিশালে ব্যাসকাঠি-বাটনাতলা, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, টুঙ্গিপাড়া, মুজিবনগর এলাকা ইত্যাদি।
ঢাকার নিকটবর্তী শুভাঢ্যার বৈশাখী মেলা, টঙ্গির স্নানকাটা মেলা, মিরপুর দিগাঁও মেলা, সোলারটেক মেলা, শ্যামসিদ্ধি মেলা, ভাগ্যকুল মেলা, কুকুটিয়া মেলা, এবং রাজনগর মেলা উল্লেখযোগ্য। দিনাজপুরের ফুলতলি, রাণীসংকৈল, রাজশাহীর শিবতলীর মেলাও ইদানিং বিরাট রূপ নিয়েছে।
সবচেয়ে রঙচঙে ও আনন্দঘন নববর্ষ উদযাপিত হয় ঢাকায়। হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয় রমনার বটমূলে। ছায়ানটের শিল্পীরা বৈশাখের আগমনী গান গেয়ে স্বাগত জানায় নববর্ষকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের বকুলতলায় একই ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ইনস্টিটিউটের সকল শিক্ষক-ছাত্ররা মিলে আনন্দ মিছিল বের করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। চারুশিল্পীদের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা নববর্ষের আহ্বানকে করে তোলে নয়ন-মনোহর ও গভীর আবেদনময়। এদিন শহীদ মিনার, টি.এস.সি এবং চারুকলা সহ পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা পরিণত হয় এক বিশাল জনসমুদ্রে।
এসব মেলায় পাওয়া যায় স্থানীয় কৃষিজাত দ্রব্য, কারূপণ্য, লোকশিল্পজাত পণ্য, কুটির শিল্পজাত সামগ্রী, সব ধরণের হস্তশিল্প ও মৃৎশিল্পজাত সামগ্রী। এছাড়া শিশু-কিশোরদের খেলনা, মেয়েদের সাজসজ্জার সামগ্রী ইত্যাদি। এছাড়াও রকমারি লোকজ খাদ্যসামগ্রী যেমন, চিড়া, মুড়ি, খৈ, বাতাসা ও বিভিন্ন প্রকার মিষ্টির বৈচিত্রময় সমারোহ থাকে মেলায়। আর পান্তা ইলিশ বৈশাখী মেলার প্রধান আকর্ষণে পরিনত হয়েছে বাংলাদেশের সব জেলায়।
সম্প্রতি বৈশাখী উৎসবের আরেকটি আকর্ষণ হচ্ছে বই। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা ইত্যাদি শহরে নববর্ষ উপলক্ষে বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলা একাডেমীর বইয়ের আড়ং এসব বইমেলার মধ্যে সবচেয়ে বড়।
শুধু খাওয়া দাওয়াই নয়, এসব মেলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকগীতি ও লোকনৃত্য পরিবেশন করা হয়। সেখানে পালাগান, কবিগান, জারিগান, গম্ভিরা গান গাজীর গান, আলকাপ গান সহ যাত্রাপালার আয়োজন থাকে। কোথাও কোথাও পথনাট্য উৎসব হয়ে থাকে। চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, নাটক, পুতুল নাচ, নাগর দোলা, সার্কাস ইত্যাদি হয় বৈশাখী মেলার বিশেষ আকর্ষণ। শিশু-কিশোরদের জন্য আরো থাকে বায়োস্কোপ। শহরাঞ্চলে নগর সংষ্কৃতির আমেজেও এখন আয়োজিত হয় বৈশাখী মেলা, এই মেলা বাঙালিদের কাছে এক অনাবিল মিলন মেলায় পরিণত হয়। এই মেলা আনন্দঘন লোকায়ত সংষ্কৃতির ধারক।
বাংলাদেশে যেসব জায়গায় বৈশাখী মেলা বসে সেসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: নারায়নগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, সাভার, রংপুরের পায়রাবন্দ, দিনাজপুরের ফুলছড়ির ঘাট, পাবনা, মহাস্থানগড়, কুমিল্লার লাঙ্গলকোট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মহেশপুর, খুলনার সাতগাছি, ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল অঞ্চল, সিলেটের জাফলং, মণিপুর, বরিশালে ব্যাসকাঠি-বাটনাতলা, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, টুঙ্গিপাড়া, মুজিবনগর এলাকা ইত্যাদি।
ঢাকার নিকটবর্তী শুভাঢ্যার বৈশাখী মেলা, টঙ্গির স্নানকাটা মেলা, মিরপুর দিগাঁও মেলা, সোলারটেক মেলা, শ্যামসিদ্ধি মেলা, ভাগ্যকুল মেলা, কুকুটিয়া মেলা, এবং রাজনগর মেলা উল্লেখযোগ্য। দিনাজপুরের ফুলতলি, রাণীসংকৈল, রাজশাহীর শিবতলীর মেলাও ইদানিং বিরাট রূপ নিয়েছে।
পহেলা বৈশাখ মানে কি পান্তা ইলিশ
ইদানিং পহেলা বৈশাখ যেনো পান্তা ইলিশ ছাড়া জমছে না। পহেলা বৈশাখ আর পান্তা ইলিশ যেনো সমার্থক শব্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৈশাখী মেলার প্রধান আকর্ষণ এখন পান্তা ইলিশ। তাও আবার মাটির সানকিতে। এখন তো অনেকে নিজের বাড়িতেই এই বিশেষ খাবারের আয়োজন করছে। আর এ কারণেই বৈশাখ আসার আগেই ইলিশের দাম চলে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
স্বাধীনতার আগে থেকেই নববর্ষের আয়োজনে পান্তা ইলিশের প্রচলন ছিলো বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। অবশ্য সে সময়ে এটা ছিলো সীমিত পর্যায়ে।
স্বাধীনতার আগে থেকেই নববর্ষের আয়োজনে পান্তা ইলিশের প্রচলন ছিলো বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। অবশ্য সে সময়ে এটা ছিলো সীমিত পর্যায়ে।
পার্বত্য জেলায়, আদিবাসীদের বর্ষবরণ
বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার প্রধান তিনটি ক্ষুদ্রজাতিস্বত্তা রয়েছে যাদের প্রত্যেকেরই বছরের নতুন দিনে উৎসব আছে। ত্রিপুরাদের বৈশুখ, মারমাদের সাংগ্রাই ও চাকমাদেরবিজু উৎসব। বর্তমানে তিনটি জাতিস্বত্ত্বা একত্রে এই উৎসবটি পালন করে। যৌথ এই উৎসবের নাম বৈসাবি। উৎসবের নানা দিক রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো মার্মাদের পানি উৎসব।
বাংলাদেশের তিনটি পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি অঞ্চলে বাংলা নববর্ষ ও চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে উপজাতীয় অধিবাসীরা আয়োজন করে ‘বৈসাবি’। বৈসাবি হলো উপজাতীয়দের সবচেয়ে বড় ঐতিহ্যবাহি ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব। গোটা পার্বত্য এলাকায় বৈসাবি নামে পরিচিত হলেও এ উৎসবকে চাকমারা বলে বিজু। মারমা উপজাতিরা বলে সাংগ্রাই, ত্রিপুরারা বৈসুক বলে। বৈসুক, সাংগ্রাই ও বিজু এই তিনটি নামের আদ্যক্ষর নিয়ে তৈরি হয়েছে বৈসাবি শব্দটি।
বছরের শেষ দুই দিন ও নতুন বছরের প্রথম দিন, এই তিনদিন মিলেই বৈসাবির মূল আয়োজন। পুরনো বছরকে বিদায় দিতে এবং নতুন বছরকে বরণ করতে সেই আদি কাল থেকেই পালন করে আসছে পাহাড়িরা এই উৎসব। এদিন তারা বিভিন্ন খেলাধুলা, সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আদিবাসী মেলার আয়োজন করে। পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিরা বৈসাবি উৎসবকে তিন ভাগে পালন করে। প্রথম দিনের উৎসব ফুলবিজু। এদিও শিশু-কিশোররা ফুল তুলে ঘর সাজায়। দ্বিতীয় দিন মূল অনুষ্ঠান মুরুবিজু। এদিন নানা রকম শাক-সবজি মিশিয়ে ‘পাজন’ নামের একটি খাবার রান্না করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহি পিঠা ও মিষ্টান্নও তৈরী করা হয়। অতিথির জন্য খোলা থাকে সবার দরজা। মারমা উপজাতিরা আয়োজন করে তাদের ঐতিহ্যবাহি ওয়াটার ফেস্টিভাল বা পানি খেলা।
বছরের শেষ দুই দিন ও নতুন বছরের প্রথম দিন, এই তিনদিন মিলেই বৈসাবির মূল আয়োজন। পুরনো বছরকে বিদায় দিতে এবং নতুন বছরকে বরণ করতে সেই আদি কাল থেকেই পালন করে আসছে পাহাড়িরা এই উৎসব। এদিন তারা বিভিন্ন খেলাধুলা, সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আদিবাসী মেলার আয়োজন করে। পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিরা বৈসাবি উৎসবকে তিন ভাগে পালন করে। প্রথম দিনের উৎসব ফুলবিজু। এদিও শিশু-কিশোররা ফুল তুলে ঘর সাজায়। দ্বিতীয় দিন মূল অনুষ্ঠান মুরুবিজু। এদিন নানা রকম শাক-সবজি মিশিয়ে ‘পাজন’ নামের একটি খাবার রান্না করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহি পিঠা ও মিষ্টান্নও তৈরী করা হয়। অতিথির জন্য খোলা থাকে সবার দরজা। মারমা উপজাতিরা আয়োজন করে তাদের ঐতিহ্যবাহি ওয়াটার ফেস্টিভাল বা পানি খেলা।
অন্যান্য দেশে বাংলা নববর্ষ আয়োজন
ভারতের কোলকাতা সহ বেশি কটি অঙ্গরাজ্যে পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হয়। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাঙালী সম্প্রদায় বাংলা নববর্ষে স্ট্রিট ফেস্টিভাল এর আয়োজন করে। ইউরোপে এটিই এশিয়ানদের সবচেয়ে বড় উৎসব। বাংলাদেশ ও ভারতের বাইরে এটিই বাঙালিদের সবচেয়ে বড় উৎসবও। এখানে প্রবাসী বাঙালিরা বিভিন্ন স্থানে ছোট আকারের হলেও মেলার আয়োজন করে। সেখানে পান্তা ইলিশেরও ব্যবস্থা থাকে। তবে শুধু ইউরোপেই নয় আজকাল আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াত মোটকথা যেখানেই বাঙালি সম্প্রদায় আছে সেখানেই মহাসমারোহে উদযাপিত হয় পয়লা বৈশাখ। দেশ থেকে সেসব মেলার আয়োজকরা কিনে নিয়ে যান রকমারি পোশাক-আশাক আর ঐতিহ্যবাহি খাবার। বিদেশের মাটিতে দেশি উৎসবে সেখানেও জমে ওঠে বাঙালির এক অনবিল মিলন মেলা।
পশ্চিমবঙ্গে পহেলা বৈশাখ
পশ্চিমবঙ্গে মহাসমারোহে সাড়ম্বরে উদযাপিত হয় বাংলা নববর্ষারম্ভ পয়লা বৈশাখ। বঙ্গাব্দের প্রথম দিনটিতে বিপুল উৎসাহ এবং উদ্দীপনার সাথে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়ে থাকে সমগ্র পশ্চিম বাংলায়। বাংলার গ্রামীণ এবং নাগরিক জীবনের মেলবন্ধন সাধিত হয়ে সকলে একসূত্রে বাঁধা পড়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর আনন্দে। সারা চৈত্র মাস জুড়েই চলতে থাকে বর্ষবরণের প্রস্তুতি। চৈত্র মাসের শেষ দিন অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তি বা মহাবিষুবসংক্রান্তির দিন পালিত হয় চড়কপূজা অর্থাৎ শিবের উপাসনা। এইদিনেই সূর্য মীন রাশি ত্যাগ করে মেষ রাশিতে প্রবেশ করে। এদিন গ্রামবাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে আয়োজিত হয় চড়ক মেলা। এই মেলায় অংশগ্রহণকারীগণ বিভিন্ন শারীরিক কসরৎ প্রদর্শনপূর্বক মানুষের মনোরঞ্জন করে থাকে। এছাড়া বহু পরিবারে বর্ষশেষের দিন টক এবং তিতা ব্যঞ্জন ভক্ষণ করে সম্পর্কের সকল তিক্ততা ও অম্লতা বর্জন করার প্রতীকী প্রথা একবিংশ শতাব্দীতেও বিদ্যমান। পরের দিন অর্থাৎ পয়লা বৈশাখ প্রতিটি পরিবারে স্নান সেরে বয়ঃজ্যেষ্ঠদের প্রণাম করে শুরু হয় দিন। বাড়িতে বাড়িতে এবং সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চলে মিষ্টান্ন ভোজন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলির অধিকাংশই এদিন থেকে তাদের ব্যবসায়িক হিসেবের নতুন খাতার উদ্বোধন করে, যার পোশাকি নাম হালখাতা। গ্রামাঞ্চলে এবং কলকাতা শহরের উপকণ্ঠে পয়লা বৈশাখ আরম্ভ হয় বৈশাখী মেলা। এই মেলা সমগ্র বৈশাখ মাস জুড়ে অনুষ্ঠিত হয়।
কলকাতা
ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী কলকাতা পয়লা বৈশাখ উদযাপনে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। নববর্ষারম্ভ উপলক্ষে শহরের রাজপথে এবং অলিতে গলিতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা আয়োজিত হয়। বিগত বছরের চৈত্র মাসে শহরের সমগ্র দোকানে ক্রয়ের উপর দেওয়া হয়ে থাকে বিশেষ ছাড়। তাই ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে কলকাতার সমস্ত মানুষ একমাস ধরে নতুন জামাকাপড়, ইত্যাদি ক্রয় করে থাকে। পয়লা বৈশাখের দিন উল্লেখযোগ্য ভিড় চোখে পড়ে কলকাতার কালীঘাটে। সেখানকার বিখ্যাত কালীমন্দিরে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ভোর থেকে প্রতীক্ষা করে থাকেন দেবীকে পূজা নিবেদন করে হালখাতা আরম্ভ করার জন্য। ব্যবসায়ী ছাড়াও বহু গৃহস্থও পরিবারের মঙ্গল কামনা করে দেবীর আশীর্বাদ প্রার্থনা করতে কালীঘাটে গিয়ে থাকেন। এইদিন বাঙালি ফিরে যায় তার ঐতিহ্যবাহী পোশাক ধুতি-পাঞ্জাবি এবং শাড়িতে। বিগত বছরের সমস্ত গ্লানি মুছে ফেলে নতুনভাবে জীবন শুরু করার ব্রত নিয়ে শেষ হয় পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান।
আর্জেন্টিনাঃ
আর্জেন্টিনায় নববর্ষের আগের দিন রাত্রে পরিবারের সব সদস্য একসঙ্গে খাবার টেবিলে বসে আহার করে। তারপর বড়রা নাচের অনুষ্ঠানে চলে যায়। ভোর পর্যন্ত চলে এ নাচের অনুষ্ঠান। নববর্ষের প্রথম দিন নদী বা পুকুরে সাঁতার কেটে তারা নববর্ষ উৎযাপন করে।
ব্রাজিলঃ
ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরো সমুদ্র সৈকতে নববর্ষের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠানটি হয়। এর অন্যতম আকর্ষণ চোখ ধাধানো আতশবাজির প্রদর্শনী। এ দিন অধিকাংশ লোকই সাদাপোষাক পরিধান করে। সমুদ্রে সাতটি ডুব দিলে এবং সাতটি ফুল ছুঁড়ে দিয়ে তারা মনে করে বছরটি ভালো কাটবে বলে। এ উৎসবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের প্রায় দুই মিলিয়ন পর্যটকরা যোগ দেয়।
আর্জেন্টিনায় নববর্ষের আগের দিন রাত্রে পরিবারের সব সদস্য একসঙ্গে খাবার টেবিলে বসে আহার করে। তারপর বড়রা নাচের অনুষ্ঠানে চলে যায়। ভোর পর্যন্ত চলে এ নাচের অনুষ্ঠান। নববর্ষের প্রথম দিন নদী বা পুকুরে সাঁতার কেটে তারা নববর্ষ উৎযাপন করে।
ব্রাজিলঃ
ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরো সমুদ্র সৈকতে নববর্ষের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠানটি হয়। এর অন্যতম আকর্ষণ চোখ ধাধানো আতশবাজির প্রদর্শনী। এ দিন অধিকাংশ লোকই সাদাপোষাক পরিধান করে। সমুদ্রে সাতটি ডুব দিলে এবং সাতটি ফুল ছুঁড়ে দিয়ে তারা মনে করে বছরটি ভালো কাটবে বলে। এ উৎসবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের প্রায় দুই মিলিয়ন পর্যটকরা যোগ দেয়।
কোরিয়াঃ
কোরিয়াতে নববর্ষ শুরুর সময় কেউ ঘুমায় না। এ সময় ঘুমালে নাকি চোখের ভ্রু সাদা হয়ে যায়! রাত বারটা বাজার সঙ্গে সঙ্গে টিভিতে ৩৩ বার ঘন্টা বাজানো হয়। কোরিয়ার ৩৩ বীরের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এটি করা হয় । কোরিয়াতে প্রায় সবাই সূর্যোদয় দেখে। সূর্যের আলো ছড়িয়ে পরার সময় একজন আরেকজনকে শুভেচ্ছা জানায়।
মেক্সিকো:
মেক্সিকোতেও ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে ১২ বার ঘন্টা বাজানো হয়। এ সময় প্রতি ঘন্টা ধবনির সঙ্গে একটি করে আঙ্গুর খাওয়া হয়। তারা বিশ্বাস করে এ সময় যা কামনা করা হয় তাই পূরণ হয়।
ভিয়েতনামঃ
ভিয়েতনামে ভোর হওয়ার সময় প্রতি নববর্ষে সবাই গুরুজনদের কাছে দীর্ঘায়ূ কামনা করে আশীর্বাদ নেয়।
কোরিয়াতে নববর্ষ শুরুর সময় কেউ ঘুমায় না। এ সময় ঘুমালে নাকি চোখের ভ্রু সাদা হয়ে যায়! রাত বারটা বাজার সঙ্গে সঙ্গে টিভিতে ৩৩ বার ঘন্টা বাজানো হয়। কোরিয়ার ৩৩ বীরের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এটি করা হয় । কোরিয়াতে প্রায় সবাই সূর্যোদয় দেখে। সূর্যের আলো ছড়িয়ে পরার সময় একজন আরেকজনকে শুভেচ্ছা জানায়।
মেক্সিকো:
মেক্সিকোতেও ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে ১২ বার ঘন্টা বাজানো হয়। এ সময় প্রতি ঘন্টা ধবনির সঙ্গে একটি করে আঙ্গুর খাওয়া হয়। তারা বিশ্বাস করে এ সময় যা কামনা করা হয় তাই পূরণ হয়।
ভিয়েতনামঃ
ভিয়েতনামে ভোর হওয়ার সময় প্রতি নববর্ষে সবাই গুরুজনদের কাছে দীর্ঘায়ূ কামনা করে আশীর্বাদ নেয়।
অনেক অনেক দিন আগের কথা
নববর্ষ উৎযাপনের প্রচলন শুরু হয় আজ থেকে চার হাজার বছর আগে প্রাচীন ব্যবিলনে। সম্ভবত সেটা খিস্টপূর্ব দুই হাজার সাল। প্রাচীন ব্যবিলনে নতুন বছর শুরু হতো নতুন চাঁদ দেখা সাপেক্ষে
0 comments:
Post a Comment