Featured Video

Pages

Sunday, May 08, 2011

মুখ ও দাঁতের যত্ন নেবেন কিভাবে




সুস্থ সবল দেহের জন্য দাঁত ও মাড়ি তথা মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখা একান- প্রয়োজন। দাঁত ও মুখের ভেতরের স্বাস্থ্যকে অবহেলা করে নিরোগ জীবন আশা করা যায় না।

মুখ ও দাঁতের যত্নে করণীয় উপদেশ, সবার জন্য সাধারণ উপদেশ:





০ প্রতিদিন সকালে এবং রাতে ঘুমাবার আগে টুথপেস্ট ও ব্রাশ দিয়ে ওপরের দাঁত ওপর থেকে নিচে এবং নিচের দাঁত নিচ থেকে ওপরের দিকে এবং দাঁতের ভেতর দিকেও মাজবেন।

০ ফ্লুরাইড দেয় যে কোনো টুথপেস্ট দাঁতের জন্য উপকারী। দু-তিন মাস অন-র টুথপেস্ট ও ব্রান্ড বদলাবেন, কারণ বিভিন্ন পেস্টে বিভিন্ন ধরনের উপাদান থাকে।

. .

০ যেসব জায়গা ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করা সম্ভব নয় সেসব জায়গায় ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করবেন।

০ কয়লা, গুল, টুথ পাউডার, ছাই, মাটি, গাছের ডাল ইত্যাদি ব্যবহার নিষেধ।

০ অত্যধিক পান-সুপারি খাবেন না- এতে দাঁত ক্ষয় হয়ে যায়।

০ বিড়ি-সিগারেট খাবেন না- এতে মুখ ও দাঁতের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

০ বিশেষ বিশেষ খাদ্য যেমন-পাউরুটি, বিস্কুট, কেক, টফি লজেন্স, আইসক্রিম ইত্যাদি খাওয়ার পর উত্তমরূপে দাঁত পরিষ্কার করবেন।

. .

০ ঘুমানোর আগে এবং খাবারের মাঝে কখনো বিস্কুট, কেক, টফি লজেন্স খাবেন না, আর খেলেও ভালো করে দাঁত পরিষ্কার করে ফেলবেন।

০ হাঁ করে ঘুমানোর অভ্যাস হলে তা পরিহার করবেন, কারণ হাঁ করে ঘুমানোর ফলে মুখে ও দাঁতের রোগ বেড়ে যায়।

মা ও শিশুদের জন্য উপদেশ:

০ মায়ের দুধ শিশুদের শরীর ও দাঁতের আদর্শ খাদ্য। যেসব মা শিশুদেরকে ফিডার দিয়ে দুধপান করান, তারা একই নিপল দীর্ঘদিন ব্যবহার করবেন না। ঘুমের মধ্যে শিশুদেরকে কোনোক্রমেই ফিডার দেবেন না; দিলে দাঁতের মারাত্মক ক্ষতি হবে। দেড় থেকে দুই বছরের শিশুদেরকে ফিডার ছাড়িয়ে পেয়ালায় দুধপান করার অভ্যাস করান।

০ সময়মতো আপনার ছেলে-মেয়েদের দুধের দাঁত ফেলে দেবেন। নচেত স্থায়ী দাঁত বাঁকা-ত্যাড়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

০ শিশু-কিশোর-কিশোরী যদি কোনো কারণে আঙুল চোষার অভ্যস্থ হয় সে ক্ষেত্রে ওই অভ্যাস রোধ করতে হবে। অপরাগতায় ডেন্টাল সার্জনের পরামর্শ নিন। নতুবা দাঁত আঁকা-বাঁকা, উঁচু নিচু ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। এ ছাড়া মুখের ও চোয়ালের স্বাভাবিক গঠন ব্যাহত ও বেমানান হতে পারে এবং মুখশ্রীর গঠন ব্যাহত হতে পারে।

০ আঁশালো ও শক্ত খাদ্য যেমন-গাজর, পেঁয়ারা, আমড়া, আখ, আনারস, নাশপাতি, আপেল, নারকেল ইত্যাদি দাঁত ও মাঢ়ি সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। উপরন- চোয়ালের স্বাভাবিক গঠনে সহায়তা করে।

০ লেবু, আমলকী, কমলা, টমেটো ও বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অন্যান্য ভিটামিন থাকে। ভিটামিন সি দাঁতের ও মাড়ির জন্য উপকারী।

. .

০ গর্ভকালীন মায়েরা টেট্রাসাইক্লিন জাতীয় অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না। কারণ এটি শিশুর দাঁতের মারাত্মক ক্ষতি করে। শিশু জন্মানোর পরেও শিশুকে ওই জাতীয় অ্যান্টিবায়োটিক ১২ বছর পর্যন্ত দেবেন না। কারণ এতে স্থায়ী দাঁতের ক্ষতি হবে।

প্রতিরোধ: দাঁত নষ্ট হয় শুধু আমাদের বদ অভ্যাস এবং অনিয়মিত দাঁত পরিষ্কার করার কারণে। তবে এ কথা সত্য যে, সবারই রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা সমান থাকে না। যারা নিয়মিত দাঁতের যত্ন করেন ও দাঁত নিয়মিত পরীক্ষা করান তারাই ভাগ্যবান। বছরে অন্তত: দু’বার একজন অভিজ্ঞ ডেন্টাল সার্জনের কাছে মুখ ও দাঁত পরীক্ষা করানো ভালো। কারণ দন্তক্ষয় বা ডেন্টাল ক্যারিজ প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় করা গেলে চিকিৎসা (ফিলিং) করিয়ে দীর্ঘদিন দাঁতটি বাঁচানো সম্ভব। তেমনি মাঢ়ির রোগ (দাঁতের গোড়া দিয়ে রক্ত পড়া) ও প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে স্কেলিং করালে দাঁত নড়ে না বা ফেলে দিতে হয় না। যাদের দাঁত ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে তাদের মনে রাখা উচিত দেহের কোনো অংশের যত্ন নেয়ার দরকার বা প্রয়োজন ফুরিয়ে যায় না। অস্বাভাবিক দাঁতকে যে ভাবেই হোক চিকিৎসা করিয়ে টিকিয়ে রাখাই শ্রেয়। আজকাল চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে দন-চিকিৎসার প্রয়োগ ও প্রসার অনেক গুণে বেড়ে গেছে। তাই একটি মূল্যবান দাঁতকে ফেলে দেয়ার আগে একটু ভেবে দেখা দরকার নয় কি?

ডা: অসীম কুমার হালদার
ডেন্টাল সার্জন, গরীব নেওয়াজ ক্লিনিক, খুলনা
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, এপ্রিল ১৭, ২০১০
সূত্র: adult24bd.blogspot.com

0 comments:

Post a Comment

 
Design by Free WordPress Themes | Bloggerized by Lasantha - Premium Blogger Themes | cheap international calls